দুর্গাপুরে মহাত্মা গান্ধী রোডে চতুর্থবারের মতো দুর্গা পূজা কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হলো। শনিবার বিকেলে দুর্গাপুরের ১২টি পুজো কমিটি অংশগ্রহণ করে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বারটি পুজো কমিটি নিজেদের পারফরম্যান্স তুলে ধরলেন কার্নিভালে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ও মলয় ঘটক, পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী, জেলাশাসক পন্নাবলম এস, সাংসদ কীর্তি আজাদ, বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, পৌর প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারপারসন অনিন্দিতা মুখার্জি, আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কবি দত্ত, সহ প্রশাসনিক স্তরের অন্যান্য কর্তা ব্যক্তিরা। এবারের কার্নিভালে চমক ছিল অভিনেতা পরমব্রত ও আন্তর্জাতিক অভিনেত্রী জয়া এহসান এর উপস্থিতি। বাংলার লোকসংস্কৃতি, শিল্প এবং ঐক্যতার ছবি। মা উমাকে কৈলাসে পাঠিয়ে আরো এক বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার শেষে তাকে কাছে ফিরে পাওয়ার জন্য এই কার্নিভালের আয়োজন। বলা যেতেই পারে, বাঙালি শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর আনন্দকে আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় এই পুজো কার্নিভাল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প।

পুজো কার্নিভাল বারবার প্রমাণ করছে কেন এই উৎসব ইউনেস্কো হেরিটেজের তকমা পেয়েছে! শহর ও শহরতলীর শ্রেষ্ঠ পূজা মন্ডপের প্রতিমা ও শিল্প কর্মকে এক ছাদের নিচে দেখার এক অনন্য সুযোগ করা হয়েছিল শিল্পাঞ্চল বাসীর। শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, ঢাক বাদ্যি দিয়ে নৃত্য গীতের সম্ভারে জমে উঠেছিল দুর্গাপুর দুর্গাপুজো কার্নিভাল ২০২৫। এই কার্নিভালে যে সমস্ত পুজো কমিটি গুলি অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা যথাক্রমে – ঊর্বশী, ফুলঝোড়, ডুমুরতলা, ক্লাব স্যন্টোজ, মার্কনি দক্ষিনপল্লী, আনন্দবিহার, গুরু নানক রোড মহিলা সমাজ, বুদ্ধ বিহার, চতুরঙ্গ, শংকরপুর এবং অগ্রণী সাংস্কৃতিক পরিষদের সর্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটিগুলি।

চিত্রালয় মেলা ময়দান থেকে সাজানো অংশগ্রহণকারী পূজা কমিটির গুলি প্রতিমা প্রদর্শনের পাশাপাশি নিজেদের থিম দর্শকদের সামনে তুলে ধরেছিল। প্রথম স্থান অধিকার করেছিল উর্বশী সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি দ্বিতীয় স্থানে চতুরঙ্গ দুর্গোৎসব কমিটি এবং তৃতীয় স্থানে ছিল বুদ্ধ বিহার সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। এছাড়া দর্শকদের বিচারে সেরা পুজোর সম্মান ছিনিয়ে নেয় শংকরপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। দুর্গাপুরের দুর্গাপূজো কার্নিভাল ২০২৫ আবারো প্রমাণ করলো যে, পুজো মানে শুধু ভক্তি বা শ্রদ্ধা নয় – এটি শিল্প, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও সমগ্র বাঙালি সমাজের ঐক্যের উৎসব।

একদিনের এই মহোৎসব, দুর্গোৎসবের আনন্দকে আরো কয়েকগুণ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়ে দুর্গাপুরের সংস্কৃতিক পরিচয় কে রাজ্য তথা দেশের বুকে এক অনন্য জায়গা করে দেয়।।
সমরেন্দ্র দাস, Lcw India দুর্গাপুর