আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এক অমানবিক চিত্র প্রশ্ন চিহ্ন তুলে ধরল শিল্পাঞ্চলের বুকে! দুর্গাপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সেকেন্ডারি রোড ও রামকৃষ্ণ এভিনিউর সংযোগস্থলে ব্যস্ততম রাস্তার পাশে কালীমন্দিরে বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে পড়েছিল দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার সংলগ্ন সোনার তরী আবাসনের বসবাসকারীর বৃদ্ধা, পার্বতী হাজরা। সারা বিশ্ব, দেশ ও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যখন সারম্বরের সঙ্গে নারীদের সম্মান জানানো হচ্ছে, ঠিক তখন এ যেন এক ব্যথিত কাহিনী। বিকেল থেকে সন্ধ্যে গড়িয়ে যায়, এরপর ঘনিয়ে আসে রাত্রি। কিন্তু কেউ কি খোঁজ নিয়েছে সেই অসহায় অভুক্ত মহিলার কথা ? আন্তর্জাতিক নারী দিবসে যে মহিলা পড়ে রয়েছে মন্দির চত্বরে! ব্যস্ততম রাস্তার পাশে মন্দিরে পড়ে থাকা মহিলার প্রতি কি নজর যায়নি কারোরই? অবশেষে ওই মন্দিরের সেবায়তে শান্তনু ভট্টাচার্যর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থলে হাজির হয় স্থানীয় প্রাক্তন পুরোপিতা পল্লব রঞ্জন নাগ ও তার সঙ্গীরা। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় থানায় যথারীতি সেখান থেকে এসে পৌঁছায় পুলিশ। এই ঘটনা প্রসঙ্গে প্রাক্তন পুরোপিতা পল্লব নাগ জানান, বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে অচৈতন্য অবস্থায় ওই মহিলাকে পড়ে থাকতে দেখে মন্দিরের সেবায়েত। কিন্তু এই ব্যস্ততম রাস্তায় একটি বারের জন্যও কেউ খবর নেয়নি উক্ত মহিলার। অবশেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রচেষ্টায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয় তার পরিবারের লোকের সঙ্গে।
এরপর মায়ের খোঁজ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পার্বতী দেবীর পুত্র বোধন হাজরা। তিনি জানান সকালবেলায় বেনাচিতির দেবীনগরে মাসির বাড়ি যাবো বলে বেরিয়েছে। এরপর সন্ধ্যে ঘনিয়ে আসে তার খোঁজ না পাওয়ায় চিন্তার মধ্যে ছিলেন। মন্দিরের পুরোহিতের প্রচেষ্টায় তার মাকে পেয়ে তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
অবশেষে রাত্রি সাড়ে ১১ টা নাগাদওই মহিলাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান তার একমাত্র পুত্র বোধন হাজরা। মাকে ফিরে পেয়ে ছলছল চোখে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। কিন্তু সবই তো হল! তবুও শিল্পাঞ্চলের মানুষের কাছে প্রশ্ন একটাই, এত ঘটা করে বিশ্বজুড়ে নারী দিবসের সার্থকতা কতটা বাস্তবে রূপ পেয়েছে??
সমরেন্দ্র দাস,Lcw India দুর্গাপুর